খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে? – [Food Chain in Bangla]

By Amit Kumar

Published on:

খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে
- Advertisement -

খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে?

কোনো বাস্তুতন্ত্রে খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের ভিত্তিতে উৎপাদক স্তর থেকে খাদক স্তরের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত ধাপে ধাপে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জীবগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্যের মাধ্যমে শক্তির শৃঙ্খলিত ধারাবাহিক প্রবাহকেই খাদ্যশৃঙ্খল বলা হয় ।

খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে?
খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে?

অর্থাৎ

A Series of Organisms through which food energy is transfered from the source in autotrophs to the largest carnivores by the process of consumption.

- Advertisement -

আবার বিজ্ঞানী ওডাম [1966]-এর মতে, “খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে যে নির্দিষ্ট প্রণালীতে খাদ্যশক্তি উৎপাদক থেকে ক্রমপর্যায়ে আরও উন্নত জীবগোষ্ঠীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেই শক্তিপ্রবাহের ক্রমিক পর্যায়কে খাদ্যশৃঙ্খল [Food Chain] বলে।

সাধারণত একটি খাদ্যশৃঙ্খলে ৩ থেকে ৫টি ধাপ বা স্তর থাকে।

খাদ্যশৃঙ্খলের প্রকারভেদ [Types of Food Chain]

প্রকৃতিতে সাধারণভাবে শক্তির সঞ্চার অনুসারে দু’ধরণের খাদ্যশৃঙ্খল লক্ষ্য করা যায়, যথা—

  • গ্রেজিং বা চারণভূমি খাদ্যশৃঙ্খল [Grazing Food Chain] এবং
  • ডেট্রিটাস বা কর্কর খাদ্যশৃঙ্খল [Detritus Food Chain]।

গ্রেজিং বা চারণভূমি খাদ্যশৃঙ্খল [Grazing Food Chain] :

গ্রেজিং বা চারণভূমি খাদ্যশৃঙ্খল
খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে?

যে প্রকার খাদ্যশৃঙ্খলে সবুজ উদ্ভিদ বা উৎপাদক শ্রেণি সৌরশক্তিকে রাসায়নিক শক্তির রূপান্তরের মাধ্যমে নিজ দেহে যে শক্তি সঞ্চয় করে তা ধাপে ধাপে তৃণভোজী ও মাংসাশী প্রাণিদেহে সঞ্চারিত হয়, তাদের চারণভূমির খাদ্যশৃঙ্খল বলে। এই ধরণের খাদ্যশৃঙ্খলকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা যায়, যথা—

  • শিকারজীবী শৃঙ্খল [Predator Chain] এবং
  • পরজীবী শৃঙ্খল [Parasitic Chain]।

উদাহরণ-

- Advertisement -
উৎপাদক→ খাদক
[প্রাথমিক]
→ খাদক
[গৌণ]
→ খাদক
[প্রগৌণ]
পুকুরের খাদ্যশৃঙ্খল :ফাইটোপ্ল্যাংটন→ জু প্ল্যাংটন→ ছোটো মাছ→ বড়ো মাছ
অরণ্যের খাদ্যশৃঙ্খল :সবুজ উদ্ভিদ→ হরিণ→ বাঘ/সিংহ
স্থলভাগের খাদ্যশৃঙ্খল :সবুজ উদ্ভিদ/ঘাস→ ফড়িং→ ব্যাঙ→ সাপ → ময়ূর

ডেট্রিটাস বা কর্কর খাদ্যশৃঙ্খল [Detritus Food Chain]:

ডেট্রিটাস বা কর্কর খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে?
খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে?

যে খাদ্যশৃঙ্খলে পচা জৈববস্তু বা বিয়োজক স্তর থেকে শুরু করে খাদক স্তরে ধাপে ধাপে শক্তি স্থানান্তরিত হয়, তাদের কর্কশ খাদ্যশৃঙ্খল বলা হয়। বিজ্ঞানী Heald এবং Odum দক্ষিণ ফ্লোরিডার লবনাক্ত জলাভূমির ম্যানগ্রোভ অরণ্যের উপর ভিত্তি করে কর্কশ খাদ্যশৃঙ্খলের দৃষ্টান্ত দিয়েছিলেন। এখানে লবণাক্ত জলাভূমির ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের পাতা অগভীর উম্ন জলে ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া কর্তৃক বিয়োজিত হলে সেগুলিকে পতঙ্গের লার্ভা, নিমাটোডস্ ইত্যাদি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে, এদেরকেই ডেট্রিটাস খাদক বলা হয়। এদের আবার ছোটো ছোটো মাছ খাদ্যরূপে গ্রহণ করে।

উদাহরণ— পচনশীল জৈববস্তু → ডেট্রিটাস কনজিউমার → ছোটো মাংশাসী মাছ → বড় মাংশাসী মাছ।

খাদ্য-শৃঙ্খলের প্রকারভেদ বাস্তুতন্ত্রে খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের তভিত্তিতে আবার মোটামুটি তিনভাগে ভাগ করা যায়,যেমন

[ক] শিকারী খাদ্যশৃঙ্খল [Predator Food Chain] : যে খাদ্যশৃঙ্খলে সাধারণত তৃণভোজী প্রাণিদের প্রাথমিক খাদকস্তর থেকে শুরু হয় এবং খাদ্য-খাদক সম্পর্কের ভিত্তিতে বৃহত্তর মাংশাসী প্রাণির স্তরে শেষ হয়, তাকেই শিকারী খাদ্যশৃঙ্খল
বলা হয়।

- Advertisement -

যথা— ঘাসফড়িং → ব্যাং → সাপ → ময়ূর।

[খ] পরজীবী খাদ্যশৃঙ্খল [Parasitic Food Chain] : বাস্তুতন্ত্রের যে খাদ্যশৃঙ্খলে খাদ্য-খাদক সম্পর্ক বৃহৎ প্রাণি বা Host থেকে শুরু হয় এবং পরজীবী ক্ষুদ্র প্রাণিতে শেষ হয়, তাকে পরজীবী খাদ্যশৃঙ্খল বলা হয়।

যেমন— মানুষ → কৃমি → বিয়োজক।

[গ] মৃতজীবী খাদ্যশৃঙ্খল [Saprophytic Food Chain] : বাস্তুতন্ত্রে যে খাদ্যশৃঙ্খল শক্তির প্রবাহকে ভিত্তি করে মৃতজীবী বিয়োজক স্তরের মধ্যেই আবদ্ধ অর্থাৎ এরূপ খাদ্যশৃঙ্খলে মৃত ও গলিত জীবদেহ থেকে ক্রমান্বয়ে জীবাণুর দিকে শক্তিপ্রবাহ দেখা যায়, তাদের মৃতজীবী খাদ্যশৃঙ্খল বলে।

যথা—মৃত উদ্ভিদ/পচা জৈব পদার্থ → ছত্রাক → ব্যাকটেরিয়া।


- Advertisement -

Leave a Comment